গতকাল রাতে মুম্বাইকে হারিয়ে শেষ চারের আশা বাচিয়ে রেখেছে কলকাতা। যদিও আদৌও কেকেআর প্লে-অপে যাবে কিনা, তা নিয়ে অনেক ‘কিন্তু, তবে’-র উপর নির্ভর করছে।
গতকাল রাতে মুম্বাইকে উড়িয়ে দেয়ার পর আইপিএলের পয়েন্ট টেবিলে সাত নম্বরে উঠে এসেছে কলকাতা। আর ৫২ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়ের ফলে নেট রানরেটও অনেকটা এগিয়েছে।
বর্তমানে কলকাতার নেট রানরেট হলো -০.০৫৭। তাতে অবশ্য যে খুব একটা লাভ হয়েছে, তা কিন্তু নয়। কেননা বাকি দুইটি ম্যাচে জয় লাভ করলেও কলকাতার শেষ চারের টিকিট নিশ্চিত হবে না।
কলকাতা যদি তাদের বাকি দুটি ম্যাচই জয় লাভ করে, তাহলে কলকাতার পয়েন্ট হবে ১৪। বর্তমানে চার দলের ঝুলিতে ১৪ পয়েন্ট বা তার বেশি আছে। ইতিমধ্যে ১৬ পয়েন্ট-সহ লখনউ সুপার জায়েন্টস এবং গুজরাট টাইটানস আইপিএলের শীর্ষ দুইয়ে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভাগ্য সুপ্রশন্ন থাকলেও কেবল তিন বা চারের উপরে শেষ করতে পারবে না কেকেআর।
বর্তমানে চার নম্বর দল হিসেবে প্লে-অফের দৌড়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে যে তিনটি দল তাদের মধ্যে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর অন্যতম। ১২ ম্যাচে বিরাট কোহলিদের পয়েন্ট ১৪।
এক ম্যাচ কম খেলে রাজস্থান রয়্যালসের ঝুলিতেও ১৪ পয়েন্ট আছে। আর সেক্ষেত্রে দুটি দল যদি মাত্র একটি করে ম্যাচও জয়লাভ করে তাহলে কলকাতার বাড়ি ফেরার টিকিট নিশ্চিত হয়ে যাবে।
তার মানে হলো পাঞ্জাব কিংস ও গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে হারতে হবে ব্যাঙ্গালোরকে (-০.১১৫)। আর ঠিক একইভাবে দিল্লি ক্যাপিটালস, লখনউ এবং চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে হারতে হবে রাজস্থানকে (+০.৩২৬)। এখানে আরও কথা আছে, সেইসঙ্গে আবার কমতে হবে নেট রানরেটও। দু’দলের থেকেই নেট রানরেট খারাপ কলকাতার।
কিন্তু হিসাব নিকাশ এখানেই শেষ হবে না। দিল্লি ক্যাপিটালস (+০.১৫০), সানরাইজার্স (-০.০৩১) দুটি ম্যাচ জয়লাভ করলেই কলকাতা বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাবে। আপাতত ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্টে আছে দু’দলের। এখানেই শেষ নয়, দু’দলেরই নেট রানরেট কলকাতার থেকে অনেক ভালো।
তাই কলকাতা চাইবে যে সানরাইজার্স দুটি ম্যাচে হেরে যাক। একটি তাদের বিপক্ষে। অপরটি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে। কারণ নেট রানরেট বেশি হয়ে গেলে গ্রুপের শেষ ম্যাচে জিতে পঞ্জাব কিংস প্লে-অফে উঠে যেতে পারে (কেকেআরের স্বার্থে বাকি দুটি ম্যাচে জিততে হবে পাঞ্জাবকে)।
অন্যদিকে, দিল্লিকে রাজস্থানের বিরুদ্ধে জিততেই হবে। হারতে হবে বাকি দুটি ম্যাচে (মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং পাঞ্জাব কিংস)। কেকেআর চাইবে যে ব্যাঙ্গালোর এবং দিল্লিকে হারিয়ে দিক পাঞ্জাব।
শেষ ম্যাচে সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে বড় ব্যবধানে হারতে হবে। তাহলে রাজস্থান (বাকি তিন ম্যাচে হারবে ধরে নিয়ে এবং সেটাও বড় ব্যবধানে), কেকেআর এবং পাঞ্জাবের ১৪ পয়েন্ট হবে। সেক্ষেত্রে নেট রানরেট ভালো থাকলে কেকেআর উঠতে পারে।
তবে সেখানেই বিপদ কাটবে না। চেন্নাই তিনটি ম্যাচ জিতে গেলে মহেন্দ্র সিং ধোনিরা ভালো জায়গায় থাকবেন। কারণ চেন্নাইয়ের নেট রানরেট ভালো (+০.০২৮)। তাই কেকেআর সমর্থকরা চাইবেন, রাজস্থানের বিরুদ্ধে জিতে যাক চেন্নাই। বাকি একটি বা দুটি ম্যাচে হেরে যাক। তাহলেই প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে যাবে।
চলুন দেখে নেয়া যাক আইপিএলের সর্বশেষ পয়েন্ট টেবিল:
শীর্ষ স্থান উঠে এসেছে আসরের নবাগত দল লাখনো সুপার জয়েন্টস। তাদের পয়েন্ট ১১ ম্যাচে ৩ হার ৮ জয়ে ১৬ পয়েন্ট। । আরেক নবাগত দল গুজরাট টাইটানস ১১ ম্যাচে ৩ হারের বিপরিতে ৮ জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে ২য় অবস্থান আছে। ১১ ম্যাচে ৪ হারের বিপরীতে ৭ জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে ৩য় স্থানে আছে রাজস্থান রয়্যালস। ৪ নম্বরে আছে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর।
১২ ম্যাচে ৭ জয়ে ১৪ পয়েন্ট তাদের। ৫ নম্বরে মুস্তাফিজের দিল্লি ক্যাপিটালস। ১১ ম্যাচে ৬ হারের বিপরীতে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে ৫ নম্বরে অবস্থান করছে তারা। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ আছেন পয়েন্ট টেবিলের ৬ নম্বরে। ১১ ম্যাচে ৬ হারের বিপরীতে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট তাদের।
৭ নম্বরে আছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। ১২ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট কলকাতার। ৮ নম্বরে রয়েছেন পাঞ্জাব কিংস। ১১ ম্যাচে ৬ হারের বিপরিতে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ৮ম স্থানে আছে পাঞ্জাব কিংস। ১১ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে ৯ নম্বরে চেন্নাই। আর ১১ ম্যাচে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানীর দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।